ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সীতাকুন্ডে স্লুইসগেট অকেজো: জলাবদ্ধতায় বিপাকে ১৮ হাজার কৃষক

  • প্রকাশিত : 28-05-2025
  • নিউজটি দেখেছেনঃ

সীতাকুন্ডে স্লুইসগেট অকেজো: জলাবদ্ধতায় বিপাকে ১৮ হাজার কৃষক ছবির ক্যাপশন: সীতাকুন্ডে স্লুইসগেট অকেজো জলাবদ্ধতায় বিপাকে ১৮ হাজার কৃষক
ad728

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকার স্লুইসগেটগুলো। উপজেলার ১৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে ৮ থেকে ৯টি এখন সম্পূর্ণ অকার্যকর। এতে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্তত ১৮ হাজার কৃষকসহ উপকূলবর্তী সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, আশির দশকের শেষ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সীতাকুন্ডের উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোতে কৃষি জমি রক্ষায় স্লুইসগেট নির্মাণ করে। এসব গেট দিয়ে পাহাড়ি ঢল ও ছরার পানি খাল হয়ে সমুদ্রের দিকে চলে যেত। স্লুইসগেটগুলোর মাধ্যমে সমুদ্রের জোয়ারের পানিও নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। তবে নব্বই দশকের পর থেকে এসব গেটের রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে লোহার গেটগুলো মরিচা পড়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এবং এখন সেগুলোর অধিকাংশই কার্যক্ষমতা হারিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, মুরাদপুর, বাড়বকুন্ড, সৈয়দপুর ও বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকায় বর্ষা এলেই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। গত বছর জলাবদ্ধতায় রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক জমি এখন অনাবাদী। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক চাষি ও দিনমজুর।
বাঁশবাড়িয়ার শিকদার খাল ও গুলিয়াখালী খালের স্লুইসগেট সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। প্রতিবারই গেটগুলোতে জোড়াতালির চেষ্টা করা হলেও তা টেকসই হয় না। লাখ লাখ টাকা খরচ হলেও কার্যকর সমাধান মিলছে না। ফলে বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি একত্র হয়ে কৃষিজমিতে দীর্ঘ সময় জলাবদ্ধতা তৈরি করে, যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
এদিকে সৈয়দপুর ইউনিয়নের বদরখালী খালে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন স্লুইসগেট নির্মাণ কাজ চলমান। প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে এগোচ্ছে, ফলে বর্ষার আগেই এটি শেষ হবে না বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, “স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকায় কৃষকদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা এই সমস্যার মূল কারণ।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানজির শরীফ বলেন, “বদরখালী খালের গেট পূনঃনির্মাণ করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ পেলে কুমিরা থেকে মিরসরাই পর্যন্ত সবগুলো স্লুইসগেট পর্যায়ক্রমে সংস্কার ও পুন:র্নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম জানান, “স্লুইসগেটগুলো সংস্কারে জরুরি ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন খালের খনন কাজও শুরু হয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই অবিলম্বে স্লুইসগেটগুলো সংস্কার ও নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে, নইলে কৃষি ও জনজীবন দুইই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।




ad728
ad728
সর্বশেষ সংবাদ
ad728