অস্তিত্বের সঙ্কট
মো. মিলন হক
আমি হারিয়ে ফেলেছি বাপ, দাদার ঐতিহ্য।
ভুলে গেছি তাদের ক্রীতদাস্বের কথা।
ভুলে গেছি তাদের রক্তস্রোতের কথা।
আমি নিজেকে করেছি খাঁচায় বন্দী।
যা সত্যি আমার কাম্য নয়!
আমি ভুলে গেছি মেঠো পথ দিয়ে হাঁটা।
ভুলে গেছি ফসলি মাঠের পানি কাঁদা।
ভুলে গেছি পাকা ফসলের সোনালী আভা।
ভুলে গেছি গ্রামের চিরসবুজ প্রাকৃতি।
সে সব কিছু আমার অতীত হয়ে গেছে।
ভুলে গেছি আপন কুড়ে ঘরের জীর্ণ
দেয়ালের কথা;যে ঘরে জন্ম হয়েছিল।
এখন সব কিছু সোনালী অতীত আমার।
দেবালয় ফেলে আমি কাঁচ দিয়ে,মোড়ানো
চাকচিক্যময় ক্যানভাসের রুমে থাকি।
আমি ভুলে গেছি লুঙ্গি গিঁট বেঁধে পরা।
নিজেকে আবৃত করে রেখেছি টাই,সুটে।
ভুলে গেছি জনম দুঃখিনী মায়ের সেবা শুশ্রূষার।
ভুলে গেছি যুবতী বোনের বিয়ে দেওয়ার কথা।
নিজেকে ব্যতি ব্যস্ত করেছি শহরের হাওয়ায়।
আমি ভুলে গেছি কুঞ্জবনে পাখির মধুর ডাক।
এখন ভুলে গেছি পাখির নীড়ের সন্ধান ।
ভুলে গেছি বিকেলে নদী পাড়ে হাঁটার স্মৃতি।
আমার কপালে পড়েছে সেসব কিছুর ভাটা।
লেগেছে নতুন সভ্যতার গোলামীর ছোঁয়া।
বেঁচে থাকায় দেখা দিয়েছে ,আমার অস্তিত্বের
ভীষণ সঙ্কট।